চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জের বাসি’ন্দা রুমা আক্তার। তার স্বামী একজন দিনমজুর। ঘরে নেই টেলিভিশন, ফ্রিজ কিংবা এসি। বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবহার বলতে মাত্র একটি ফ্যা’ন, একটি বাল্ব ও একটি অ্যানালগ মোবাইল ফোন চার্জ দেয়া। পল্লীবিদ্যুতের সংযোগ নেয়ার পর থেকে তাদের মাসিক বিল আসতো ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা।
তবে গত মা’র্চ মাসে ওই এক ফ্যা’ন, এক বাল্ব ও এক মোবাইল ব্যবহারে তাদের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৭৮ হাজার ৪৩০ টাকা। ভুতুড়ে বিল নিয়ে মহাবিপাকে পড়া রুমা আক্তার অ’ভিযোগ নিয়ে যান চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসে। তবে তার অ’ভিযোগ পাত্তাই দেয়নি ক’র্তৃপক্ষ।
পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের কর্মক’র্তারা ঘটনাস্থলে না গিয়েই গ্রাহক রুমা আক্তারকে জানিয়ে দেয়, তার বাড়িতে সর্টসার্কিট হওয়ায় মিটারে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে। তাকেই ওই বিল পরিশোধ করতে হবে। তবে রুমা আক্তারের দাবি- বাড়িতে সর্টসার্কিট বা বিদ্যুতের কোনো দু’র্ঘটনায় ঘটেনি।
ভুক্তভোগী রুমা আক্তার বলেন, ‘আমা’র স্বামী দিনমজুর। আমর’া কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে দিন পার করি। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ১০০, ১২০ কিংবা ১৫০ টাকা। হঠাৎ মা’র্চ মাসে এসেছে ৭৮ হাজার ৪৩০ টাকা।’
তিনি অ’ভিযোগ করে বলেন, ‘এতো টাকা কীভাবে বিল আসলো তা জানতে আমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানকার স্যারেরা (পল্লীবিদ্যুৎ কর্মক’র্তা) আমা’র সঙ্গে যে খারাপ ব্যবহার করছে, তা বলার ভাষা নেই। আমর’া গরিব, তাই বলে কী মানুষ না? বিল দিতেই হবে বলে আমাকে অফিস থেকে নামিয়ে দিয়েছেন।’
রুমা বলেন, ‘ঘরে আমি একটা ফ্যা’ন আর একটা এনার্জি বাল্ব চালাই। এতো বিল কী কারণে আমি দেব? গরিব মানুষ আমি এতো টাকা কোথায় পাবো? সরকারের কাছে আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’
জানা গেছে, চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতাধীন সাহেবগঞ্জের বাসি’ন্দা রুমা আক্তার প্রায় ৫ বছর ধরে মিটারটি (হিসেব নং: ০৩-৫৩৬-১১৭৮) ব্যবহার করে আসছেন। প্রথম’দিকে তিনি শুধুই একটি বাল্ব ব্যবহার করতেন। এখন একটি এনার্জি বাল্ব ও একটি ফ্যা’ন ব্যবহার করছেন।
নিয়মিত মাসিক বিলও তিনি পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ মা’র্চ মাসে তার ভুতুড়ে বিল আসে। যা নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও রুমা আক্তার কোনো সমাধান না পেয়ে মাথায় হাত পড়েছে গৃহবধূ রুমা আক্তারের।
চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ফরিদগঞ্জ জোনাল শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্ম’দ নূরুল হোসাইন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিটের কারণে রুমা আক্তারের মিটারে বেশি ইউনিট খরচ হয়েছে। যা ওই মিটারের আওতায়। মা’র্চে মাসে তার যে বিল এসেছে, সেটা একসঙ্গে পরিশোধ করতে না পারায় তাকে কিস্তিতে বিল পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছি।’